কেমন হবে ভবিষ্যৎ পৃথিবী অবাক করা কিছু তথ্য

🌞আগামী পৃথিবীর বিস্ময়🌞

বিজ্ঞান বিস্ময়ের জগৎটাকে আরও বড় করে তুলছে। কল্পনারাজ্যের অনেক গল্পই এখন আমাদের চোখের সামনে হাজির। কে ভাবতে পেরেছিল আপনি হাজার মাইল দূরের মানুষের কাছে এক সেকেন্ডেই কথা পৌঁছে দিতে পারবেন, দেখতে পারবেন ভিডিও কলে? অথবা মহাকাশে ঘরদোর বানিয়ে দিব্যি আয়েশ করে কাটাবেন জীবন? চাঁদে বা মঙ্গলে বসতি স্থাপনের কথা শুনে একটু চমকে উঠতেই পারেন। এভাবেই চমকে উঠেছিল মানুষ যখন কেউ বলত, আকাশে ওড়া যাবে! আজকাল উড়োজাহাজ খুব মামুলি বিষয়।
সময় পাড়ি দেওয়া, মৃত্যুকে জয় করা, মহাকাশে ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা- সবই হয়তো আজ চমকে দিচ্ছে আপনাকে কিন্তু আগামীর পৃথিবীর বিস্ময়গুলো এমনই। অলীক কল্পনা বাস্তবে নেমে এলে কেমন হবে মানুষের ভবিষ্যৎ?


✨অমরত্বের খোঁজে ছুটছে মানুষ

মৃত্যুকে জয়ের চেষ্টা অনেক পুরনো। পৃথিবীর এই দারুণ জীবন হারানোর বেদনা, আতঙ্ক মানুষ বারবার ফিরিয়ে নিয়ে গেছে একটি চ্যালেঞ্জের সামনেই- মৃত্যুকে জয় করা, অমর হওয়ার বাসনা।
বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন অধরা এ স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু মৃত্যু সেই অজেয়ই থেকে গেছে। আর সে কারণেই এ আধুনিক সময়ে এসেও অমরত্বের লোভে মানুষের চোখ জ্বল জ্বল করে ওঠে। কিন্তু সত্যি কী অমরত্ব লাভ সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্নায়ুবিজ্ঞান, জৈবপ্রযুক্তি এবং রোবোটিক্সের সমন্বিত ব্যবস্থার মাধ্যমে মানব মস্তিষ্ক কৃত্রিম ব্যবস্থায় রূপান্তর সম্ভব। ২০৪৫ সালের মধ্যে মানব মস্তিষ্ককে মেশিনে রূপান্তরের মাধ্যমে অমরত্ব লাভ সম্ভব বলে মানা হয়।
অমরত্বে পথে হাঁটতে গিয়ে মানুষ কিন্তু কৃত্রিম অঙ্গ-প্রতঙ্গ ব্যবহারের মাধ্যমে সাফল্য পেয়েছে। তাই বলে মানুয়ের মৃত্যুকে ঠেকিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা হাতে আসেনি। কৃত্রিম কিডনি স্থাপন করে বেঁচে থাকছেন অনেক কিডনি রোগী। বিকলাঙ্গরা অঙ্গ ফিরে পাচ্ছেন রোবোটিক্সের কল্যাণে। মৃত্যুকে ঠেকানো না গেলে ঠিক কোন উপায়ে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে সে নিয়ে বিস্তর কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিরূপ পরিবেশেও মানুষকে টিকে থাকতে হলে এ অমরত্ব লাভের বিশেষ দিকগুলোর দিকেই বেশি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। কীভাবে মানব মস্তিষ্ক মন, কৃত্রিম দেহতে স্থানান্তরিত করা যায় সেদিকগুলোতেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানী দিমিত্রি অবশ্য আবার নতুন করে আলো জ্বেলেছেন। তার ভাষ্য, মানুষ অমরত্ব লাভের জন্য আগামী ৩২ বছর কাজ করবে। শুরুর দিকে রোবোটিক এভাটার তৈরি করা হবে, যা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মানব মস্তিষ্কের আদলে কম্পিউটার মস্তিষ্ক তৈরি করা হবে, হলোগ্রাফিক এভাটারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া ডাটা ট্রান্সফারেরও নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে অমরত্বের স্বাদ নেওয়ার চেষ্টাও চলছে। এভাবে কম্পিউটারে মন আপলোড করে অমরত্ব পাবে মানুষ। স্নায়ুবিজ্ঞানের অবিশ্বাস্য উন্নতির কল্যাণে মস্তিষ্কের কার্যক্রম রেকর্ড করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্কের আংশিক পুনর্গঠনেও সফল হয়েছেন তারা। মস্তিষ্কভিত্তিক কম্পিউটার তৈরিতেও অনেকখানি এগিয়ে গেছেন প্রযুক্তিবিদরা। একে তারা বলছেন ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই)। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ককলিয়ার ইমপ্লান্টকে বিশেষ ইলেকট্রোডের সহায়তায় জুড়ে দেওয়া হয় কম্পিউটারের সঙ্গে। এ ধরনের একটি কম্পিউটারের মাধ্যমে জš§বধির এক ব্যক্তি প্রথমবারের মতো শব্দ শুনতে পাওয়ার সাফল্য পাওয়া গেছে। ধারণা করা হয়, ২০৪৫ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যেই ক্ষমতায় মানুষের মস্তিষ্ককে ছাড়িয়ে যাবে প্রযুক্তি। সৃষ্টি হবে নতুন ধরনের অতি বুদ্ধিমত্তার, যাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন সিঙ্গুলারিটি। অন্য বিজ্ঞানীদের ধারণা, ২১০০ সালের মধ্যেই মানুষের ওপর আধিপত্য বিস্তার করবে রোবট। মুরের নীতি অনুযায়ী, প্রতি দুই বছর অন্তর কম্পিউটিং ক্ষমতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। এদিকে কিছু প্রযুক্তির কল্পনাতীত উন্নতি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জেনেটিক সিকোয়েন্সিং ও ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ। অতি রক্ষণশীল হিসাব অনুযায়ী মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে ১০০ কোটি গুণ বাড়ানো সম্ভব। ইতসকভ ও অন্য ট্রান্সহিউম্যানিস্টরা সিঙ্গুলারিটিকে ধরছেন ডিজিটাল অমরত্ব হিসেবে। তাদের মতে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের মস্তিষ্কের কার্যধারা ও মনের অলিগলি এখনই কম্পিউটারে অল্প পরিমাণে হলেও ধরা সম্ভব হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে প্রযুক্তি দিয়েই মানুষের সব চিন্তাধারার প্রক্রিয়াকে আবেগের সংমিশ্রণসহ হয়তো কম্পিউটার প্রোগ্রাম হিসেবে আপলোড করা সম্ভব হবে। তখন খুব সহজেই এ দেহের বাইরেও বেঁচে থাকা যাবে অনন্তকাল।


✨চাঁদে-মঙ্গলে বসবাস

চঁাঁদে পর্যটক পাঠানোর জন্য বুকিং দিতে পারবেন আজই। ধারণা করা হচ্ছে আগামী ২০ বছরের মধ্যেই চাঁদে গিয়ে অবকাশ কাটাতে পারবে পৃথিবীবাসী। এ ছাড়া লিফটের আদলে গড়ে তোলা হতে পারে চাঁদে যাওয়া- আসার রাস্তা। এসব এখন আর কল্পনা নয়। ৫০ বছর আগেও মানুষ এসব স্রেফ গালগল্প বললেও এখন মহাকাশে গিয়ে দিনের পর দিন থাকছেন মহাকাশচারীরা। চাঁদে মানববসতি স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে মানুষ। তবে
পৃথিবীর বাইরে বসবাসের জন্য মঙ্গল গ্রহকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য স্থান বলে মনে করে থাকেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলে বসবাসের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করেন এমন বিশেষজ্ঞদের পরিষ্কার মতামত রয়েছে আগামী ১০ বছরের মধ্যে লাল গ্রহটিতে উপনিবেশ স্থাপন করার। মার্স ওয়ান নামে একটি প্রকল্পের কথা বলা যায়। একেবারেই যে এটা অসম্ভব নয় সেটা বিশ্ববাসীর আগ্রহের দিকে তাকালেই অনুমান করা যায়। তাছাড়া মহাকাশ নিয়ে নিত্যনতুন সম্ভাবনার কথা এলেও নাসা বরাবরই বলে এসেছে যদি পৃথিবীর বাইরে মানুষ কোথাও অচিরেই বসবাস করতে পারে, তাহলে সেটা হবে মঙ্গল গ্রহ। মঙ্গলে স্থায়ী বসতি স্থাপনের পরিকল্পনার কথা গোপন নয়। মঙ্গলে স্থায়ী বসবাসের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সেখান থেকে ফেরা নিয়ে গভীর সংশয়। মঙ্গলে বসবাসের স্বপ্নপূরণের জন্য বহুল আলোচিত নেদারল্যান্ডসের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘মার্স ওয়ান’ থেকে কিংবদন্তি মার্কিন জ্যোতির্বিদ কার্ল সাগানের পুরো কল্পনা সত্যিই আশা জাগায়। তিনি মঙ্গলে একটি উপনিবেশ গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন। মঙ্গলকে মানুষের বাসের উপযোগী করে তোলার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্যই মঙ্গলে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। । বিরূপ পরিবেশে টিকে থাকতে তারা যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে গবেষণা করছেন তা হলো মঙ্গল গ্রহে থাকার সময়ে মানবদেহকে অভিযোজন প্রক্রিয়ায় সেখানকার মধ্যাকর্ষণের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো। সব হিসাব মিললেই অচিরেই বসবাসের জন্য যাত্রা হবে মঙ্গলের দিকে।


✨টাইম ট্রাভেলিং

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানও বারবার বলেছে, কী করে ভবিষ্যতে বেড়াতে যেতে হয়। আইনস্টাইনও সে পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। আলোর কাছাকাছি গতিতে ছুটতে পারলে সময় সময় পরিভ্রমণের অসম্ভব সম্ভব হয়ে যাবে। ১৯৯২ সালে হকিং জানিয়েছিলেন, টাইম মেশিন বানাতে চাইলে লাগবে ঋণ-শক্তি (নেগেটিভ এনার্জি)। শক্তির এ অচেনা ধরন মিলতে পারে কেবল শূন্য দশার (ভ্যাকুয়াম স্টেট) নিচে। এমনকি মধ্যাকর্ষণের বিপরীত প্রভাবও রয়েছে এ শক্তির। তা সত্ত্বেও কোয়ান্টাম মেকানিক্স অদ্ভুত এ শক্তিকে সমর্থন দেয়, এমনকি এ কথাও বলে, মহাবিশ্বে এ ধরনের শক্তি থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, মানুষ যে পরিমাণ ঋণ-শক্তি তত্ত্বীয়ভাবে তৈরি করতে পারে তা খুবই নগণ্য। ’ টাইম মেশিন বানানোয় সমস্যা আরও আছে। কোয়ান্টাম ইফেক্টের কারণে অতীতের যে কালেই যাওয়া যাক না কেন, টাইম মেশিন বস্তুত হয়ে পড়বে আত্মধ্বংসী। ’ এত কিছুর পরও বিশেষজ্ঞরা হাল ছেড়ে দিতে রাজি তো ননই বরং গবেষণা চালিয়ে নিচ্ছেন পুরোদমে।


✨দেখা হবে ভিনগ্রহীদের সঙ্গে

ভিনগ্রহে প্রাণের সন্ধান, মানুষের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আদান-প্রদানের মাধ্যমে। বিভিন্ন দিক থেকে পৃথিবীকে মানুষ আরও অবাসযোগ্য করে তুলছে। যুদ্ধ এবং পরিবেশ দূষণ এসবের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক।
মানবজাতির বিলুপ্তি প্রতিরোধে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিজের পরমর্শগুলো হচ্ছে বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক গবেষণার নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণার ফল যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করা। রিজ নিউক্লিয়ার অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। তারপরও বলছেন, এ অস্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার জন্য অতটা বিপজ্জনক নয়, যতটা বিপজ্জনক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত অগ্রগতি। জৈবঅস্ত্র ব্যবহারকারীদের আচরণ থেকে এর ভয়াবহতা আরও নিশ্চিত করেছে। এগুলো আগামী দশকের মধ্যে প্রকট আকারে দেখা দেবে। এ বিপদ থেকে বাঁচতে আমাদের মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য হতে হবে। না হলে ধ্বংস অনিবার্য হয়ে উঠবে। এ জন্যই গবেষকরা বায়োটেকনোলজি বা জৈবপ্রযুক্তি, কৃত্রিম জীবন, ন্যানোটেকনোলজি ও পরিবেশের পরিবর্তনে মানবসভ্যতার কী ধরনের ধ্বংসের ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে তা নিয়ে গবেষণা শুরু করতে যাচ্ছেন। এসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিশেষভাবে কার্যকরী হবে বলেই মনে করা হয়। তবে বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ভিনগ্রহে মানুষের মতো মেধাসম্পন্ন প্রাণীর অস্তিত্ব থাকলেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তবে এটা সবসময়ই কৌতূহলের যে সৌরজগতে অন্য কোথাও প্রাণের সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।


✨কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় জীবনযাপন

বিভিন্নভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে কাজ হচ্ছে। মনুষ্য আকৃতির রোবটের উন্নয়ন গেল কয়েক দশকে কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গেছে। সামরিক প্রযুক্তি বানানোর বিষয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে যোদ্ধা রোবট। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পে আমেরিকা ব্যয় করছে সারা বিশ্বের মোট খরচের অর্ধেক। সামরিক গবেষণায় সবচেয়ে শক্তিশালী এ দেশটি রোবটচালিত অস্ত্রের ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। আমেরিকার পাইলটবিহীন ড্রোন বিমান তাদের সে গবেষণারই ফসল। এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা প্রশ্ন করেই চলেছেন, কোনো বৈদ্যুতিক সার্কিটের বুদ্ধি কি মানুষের খুবই অনুগত বন্ধু হতে পারে, নাকি তা সম্ভাব্যভাবেই বিপজ্জনক? চিন্তা করতে সক্ষম অস্ত্র মানুষ কি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম? বিজ্ঞানীরা মানছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিবর্তিত হতে পারে। তারা এক কৃত্রিম ধরনের প্রজাতির সৃষ্টি করেছিলেন, যাদের ডিএনএ বদলে দেওয়া হয়েছিল কম্পিউটারের কোড, যা নিয়মিতভাবে সংশোধিত হচ্ছিল। যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কাজ করতে পারে, তাই আমেরিকার বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, তা বিপজ্জনক, আর তা আলাদা করে আটকে রাখা দরকার। কেনটাকি রাজ্যের লুইস ভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী রমান ইয়ামপোলস্কি মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বন্ধনহীন সম্ভাবনা রাখে ও মানুষের মনের ওপরে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আবার এটাও হতে পারে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পূর্ণভাবেই মানুষের ওপরে নির্ভরশীল হবে। কারণ মানুষই ঠিক করে কোন ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পন্ন অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। এমন বক্তব্য উপস্থাপন করা হলেও রোবটের আরও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকেই সবাই নজর দিচ্ছেন। কীভাবে রোবটের ভিতর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও নিখুঁত ও বাস্তবসম্পন্ন করা যায় সেদিকেই এখন কাজ চলছে। মানবিক আবেগসম্পন্ন রোবটের কথাও তাই বিজ্ঞানীরা ভাবছেন। আবেগ পুরে দিয়ে কৃত্রিম মানুষের যে ধারণা কল্পবিজ্ঞানী-লেখকরা বারবার বলে এসেছেন সেটাই যেন বাস্তবে আসবে। মানব আকৃতির রোবট নির্মাণে সবচেয়ে এগিয়ে আছে সনি কোম্পানি। নিশ্চয়ই মনে আছে, তাদের আসিমো রোবট সাধারণের চোখ কপালে তুলে দিয়েছে। নিজে থেকেই মানুষের মতো হাঁটা, নাচ করাসহ যা কিছু সবার সামনে করে দেখায়, কে বলবে যে সে কৃত্রিম বুদ্ধি মাথায় নিয়ে চলছে। আজকাল জটিল অপারেশন, শিক্ষকতা, রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন, গাড়ি ড্রাইভিং, ফায়ার সার্ভিসের কাজ, যুদ্ধসহ নানা পেশায় রোবট ব্যবহারে সাফল্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। আর তাই বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সত্যই মানব সমাজকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে। এ ছাড়া কিছু গবেষণা প্রমাণ করেছে, সব রকমের সাবধানতা নেওয়া সত্ত্বেও এ ধরনের বুদ্ধিকে আটকে রাখা যায় না। এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে তাই অনন্ত চেষ্টাই শেষ সম্বল।

সৌজন্যেঃ Mydul Islam Shawon
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url