থ্যালেসের বিদ্যুৎ আর রাখাল ম্যাগনেসের চুম্বক

* স্থির বিদ্যুৎ
রেশমি কাপড় দিয়ে অ্যাম্বর পাথর পরিষ্কার করতে গিয়ে স্থির বিদ্যুৎ আবিষ্কার করেন থ্যালেস। পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী তিনি। খ্রিস্টের জন্মের ৬০০ বছর আগের কথা। থ্যালেস একদিন অ্যাম্বর নামের এক ধরনের পাথর নিয়ে কাজ করছিলেন। পাইন গাছের আঠাকে আমরা রজন বলে চিনি। এই রজনই দীর্ঘদিন মাটির নিচে পড়ে থাকলে ফসিল পাথরে পরিণত হয়। ভারি সুন্দর সেই পাথর। বাজারে ভালো দামও আছে। এই ফসিল পাথরকেই অ্যাম্বর বলে। সেদিন থ্যালেস পাথর নিয়ে বসেছিলেন একে মসৃণ করার জন্য। এজন্য তিনি রেশমি কাপড় দিয়ে ঘষছিলেন অ্যাম্বরটিকে। হঠাৎ খেয়াল করলেন ঘষা পাথরটি পাখির পালককে আকর্ষণ করছে। অনেক ভেবেচিন্তে থ্যালেস নিশ্চিত হলেন, রেশমি কাপড়ে ঘষার কারণে বিদ্যুৎ তৈরি হয়েছে অ্যাম্বরে।
* চুম্বক
৪ হাজার বছর আগের কথা। ম্যাগনেস নামে এক রাখাল ছিল দক্ষিণ গ্রিসে। মাঝে মাঝেই ভেড়া চরাতে যেত মাঠে। পাথুরে পাহাড়ি মাঠ। এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অজস্র পাথর। একদিন সে একটা ভেড়া হারিয়ে ফেলে। খুঁজে খুঁজে হয়রান। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। অবশেষে ভেড়ার খোঁজে পাহাড়ে ওঠে ম্যাগনেস। হঠাৎ একটা কালো পাথরে তার পা আটকে যায়। অবাক হয় ম্যাগনেস। কিসে আটকালো ভেবে পায় না। বোঝার চেষ্টা করে। একসময় আবিষ্কার করে কালো পাথরের সঙ্গেই তার জুতা আটকে গেছে। অদ্ভুত ব্যাপার! ম্যাগনেসের জুতার নিচে পেরেকজাতীয় কিছু ছিল, যাতে পাহাড়ে উঠতে গিয়ে পিছলে না যায়। ম্যাগনেস বুঝতে পারে লোহার পেরেককে টেনে ধরেছে কালো পাথর। অপ্রত্যাশিতভাবেই আবিষ্কার হয়ে যায় চুম্বক পাথরের।
ম্যাগনেসের নাম থেকেই ওই পাথরের নামকরণ করা হয় ম্যাগনেট। রাখাল ম্যাগনেস অপ্রত্যাশিতভাবে চুম্বক আবিষ্কার করেছে- চুম্বক আবিষ্কারের এই গল্পটি নিয়ে দু’দলে ভাগ হয়ে গেছেন বৈজ্ঞানিকরা। কেউ কেউ মনে করেন, এটা নিছকই বানানো একটা গল্প। অন্যদল মনে করেন গল্পটা আসলে সত্যি।
এভাবেই বিদ্যুৎ আর চুম্বক পরিচিত হয় মানুষের কাছে।
সৌজন্যেঃ Mydul Islam Shawon